ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে দেশে অবসান হয়েছে আওয়ামী শাসনামলের। তবে দেশজুড়ে এখন ও চলছে অস্থিরতা। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, এমনকি লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। তবে এ সহিংসতাকে ঘিরে দেশীয় গণমাধ্যমের তুলনায় ভারতের গণমাধ্যমগুলো প্রচার করছে উসকানিমূলক প্রতিবেদন ।
ফেসবুক, এক্স, টিকটক ও ইউটিউবের মত সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ভয়াবহ গুজব। সাম্প্রদায়িক রং মাখিয়ে বানানো এসব গুজবের রেশ এসে পড়ছে বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সোশ্যাল প্লাটফর্মেও। ফলে অস্থিরতা আরও বাড়ছে ।ভারতীয়দের ছড়ানো মারাত্মক পর্যায়ের গুজব শনাক্ত হয়েছে ৩০টির বেশি।এর মধ্যে ৫ আগস্ট রাতে ‘হিন্দুত্ব নাইট’ নামে এক্স আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশের হিন্দু ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে’। অথচ ওই ভিডিওটি মাশরাফির বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার। এ ঘটনায় লিটন নিজে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, তার বাড়িতে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তিনি নিরাপদে ও ভালো আছেন।
আবার গত ৭ আগস্ট বিকেলে এক্সে মোহন গৌড়া নামে আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ-আসাম সীমান্তে শরণার্থীদের ভিড় তৈরি হয়েছে’। অথচ যে ছবি পোস্ট করা হয়েছে, সেটি ছিল ২০১৮ সালে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে দুই দেশে বসবাসরত বিচ্ছিন্ন আত্মীয়দের মিলনমেলার ছবি।গুজবের সীমান্ত পার হওয়ার কোন নতুন ঘটনা নয়। খবর যেমন বৈশ্বিক, গুজব বা ভুয়া খবরও বৈশ্বিক। এর আগেও ২০২১ সালে কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সময়েও বাংলাদেশের ভুয়া খবর ভারতে ছড়িয়েছে।ভারত-বাংলাদেশে ভুয়া খবর দ্রুত সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার কারণ আমাদের মধ্যে ভাষা সংস্কৃতি ধর্মের মিল রয়েছে । ফলে বাংলাদেশ বা ভারত যে কেউ অশান্ত হলে ভুয়া খবর দুই পক্ষকেই খুব জলদি আক্রান্ত হয় । এজন্যে সবার আগে ভুয়া খবর বা গুজব ছড়ায় ।
এদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।তাই ভারতের যে কোন ধরনের কভারেজ দেখে সাথে সাথেই বিচলিত হবেন না সব সময় নিজস্ব বিচার-বিবেচনা প্রয়োগ করুন । বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, দেশে শান্তি বজায় রাখুন।