ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগের দিনও গণভবনে ছিল কোটি কোটি টাকা, যার দায়িত্বে ছিলেন কয়েকজন কর্মকর্তা। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র বাংলা ব্রিফকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। ৪ঠা আগস্ট রাতে শেখ হাসিনা তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ পাঁচজন নেতা ও কর্মকর্তার সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকটি করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জুনায়েদ আহমেদ পলক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, “আর অপেক্ষা নয়, আর আপোষ নয়। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে হবে।” বাংলা ব্রিফ জানতে পেরেছে, বৈঠকে পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, পুলিশের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গুলির সংকট ও জনসমাগম বাড়ার কারণে গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যদিও শেখ হাসিনা আইজিপির প্রশংসা করেন, তবে বৈঠকের শেষে তিনি উত্তপ্ত হয়ে বলেন, “তোমাদের দিয়ে কিছু হবে না। আমি সেনাবাহিনীকে বলবো গুলি করতে এবং পরিস্থিতি কঠিন করতে।”
সেনাবাহিনী আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা কোন অবস্থাতেই গুলি করবে না। এই কথা শুনে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি তোমাদের জন্য কত কিছু করেছি, আর তোমরা এখন গা বাঁচানোর চেষ্টা করছো। যা করার আমি করবো।” তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনী মার্শাল ল’ দিচ্ছে না কেন? তাহলেই তো পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে যাবে।”
বাংলা ব্রিফ আরও জানতে পেরেছে যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারু জামান আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে মার্শাল ল’ দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা সম্ভব নাও হতে পারে এবং বিশ্ব পরিস্থিতিও মার্শাল ল’ এর পক্ষে নয়। এরপর বৈঠক শেষ হয়। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে আন্দোলনকে বিপথগামী করতে টাকা ছড়ানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং গণভবনে গচ্ছিত টাকা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে দেয়া হয়। পরদিন শেখ হাসিনা পালিয়ে যান, এবং গণভবন লুট হয়। লুটকারিরা সেই টাকাও নিয়ে যায়। তবে ঠিক কত কোটি টাকা ছিল তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে ৫৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর হাতে দেয় জনতা।