সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ অভিযোগ ছড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদকের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এ প্রতিবাদ জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ সম্প্রতি ফেসবুকে এক পোস্টে দুদকের মহাপরিচালকসহ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রকাশ করা হয়েছে এবং তা কমিশনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে বলে দুদক মনে করে।
দুদক আরও জানায়, সম্প্রতি একটি প্রতারক চক্র নিজেদের দুদকের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা মামলা থেকে অব্যাহতির আশ্বাস দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডে কমিশনের কোনো কর্মকর্তা জড়িত নয়। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
প্রতারণামূলক কার্যক্রম ঠেকাতে সতর্কতা জারি করে দুদক জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনায় বিভ্রান্ত না হয়ে কেউ প্রতারণার শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে কমিশনের টোল ফ্রি হটলাইন ১০৬-এ অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয়ে কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, দুদকের একজন কর্মকর্তা পরিচয়ে এক লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মাহমুদা মিতুর কাছে। তিনি বলেন, “আপনার নামে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলেও ক্লিয়ারেন্স পেতে ১ লাখ টাকা দিতে হবে।” তিনি আরও লেখেন, “এই ধরনের ঘুষ ও হুমকি-ধামকি দিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে, অথচ আগের সরকারের দুর্নীতির বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
হাসনাতের অভিযোগে আরও উঠে আসে, “নতুন সরকারের সময়েও দুদকের মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি, বরং পুরোনো ধারা বজায় রেখেই সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে তারা।” তাঁর দাবি, “মাহমুদা মিতু ভিডিও প্রমাণ রেখেছেন, তবে অনেক সাধারণ মানুষ চুপচাপ ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছেন।”
এই পোস্ট ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। যদিও দুদক স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, যেকোনো অনিয়ম বা অভিযোগের বিষয়ে তথ্য থাকলে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় কমিশনের কাছে তা জানাতে হবে, সামাজিক মাধ্যমে ভিত্তিহীন প্রচারণা নয়।