সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানিতে আদালতকে জানিয়েছেন, “দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি। এক হাজার বছরেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, যদি না মৌলিক সংস্কার করা হয়।” ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে এ বক্তব্য দেন তিনি।
দুপুর দেড়টার দিকে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের অনুমতিক্রমে বক্তব্য রাখেন হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, “মাননীয় আদালত, আপনি ন্যায়বিচার করবেন। আমি স্বীকার করছি, রাজনৈতিক দলের অধীনে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হয়নি। তুলনামূলকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনেক বেশি সুষ্ঠু ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালেও মানুষকে পথে আটকিয়ে নমিনেশন দিতে দেওয়া হয়নি। শেখ মুজিবও ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেননি। সেই সময়ের নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি।”
শুনানি শেষে আদালত হাবিবুল আউয়ালের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ২৩ জুন সাবেক সিইসি এ কে এম নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। হাবিবুল আউয়ালকে গত ২৫ জুন রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ২২ জুন বিএনপির পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে বরং ভয়ভীতি প্রদর্শন ও কারসাজির মাধ্যমে ভোট ছাড়া নির্বাচন আয়োজন করা হয়।
পরে ২৫ জুন মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ যুক্ত করা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা এবং ২০২৪ সালের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া মামলায় আসামি করা হয়েছে তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার, একেএম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও বর্তমান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে।