চট্টগ্রাম নগরীর যানজটপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অক্সিজেন মোড়। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই মোড় পার হতে গিয়ে যানজটে পড়ে। এই দুর্ভোগ কমাতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যার মূল লক্ষ্য একটি সাত র্যাম্পবিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং বায়েজিদ থেকে কুয়াইশ পর্যন্ত সড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা।
সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, পুরো প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে সাত কিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে অক্সিজেন থেকে কুয়াইশ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ করে ৯০ ফুট প্রশস্ত করা হবে। বর্তমানে এই সড়কের প্রস্থ কোথাও ৪০ ফুট, কোথাও আবার ৬০ ফুট। সড়ক প্রশস্তকরণ ছাড়াও পুরো প্রকল্পে ফ্লাইওভারের জন্য একাধিক র্যাম্প নির্মাণ করা হবে, যাতে যান চলাচলে গতি আসে।
এই প্রকল্পের ব্যয়ের ৭০ শতাংশ যাবে ভূমি অধিগ্রহণে, যা সিডিএ কর্মকর্তাদের মতে, বাস্তবায়নের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ।
সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, ‘অক্সিজেন মোড় দীর্ঘদিন ধরেই নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ হলেও যানজট এখানকার মানুষের জীবনে যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরের সঙ্গে হাটহাজারী, রাউজান, ফটিকছড়ি এবং পার্বত্য জেলার যে সংযোগ, তা সহজ করতে ফ্লাইওভার ও রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে।’
ফ্লাইওভারটির গঠন হবে জটিল প্রকৃতির। বায়েজিদ মোড় থেকে দুটি র্যাম্প যাবে হাটহাজারী ও কুয়াইশ সড়কে, হাটহাজারী সড়ক থেকে দুটি র্যাম্প যুক্ত হবে বায়েজিদ ও মুরাদপুরমুখী সড়কে এবং কুয়াইশ সড়ক থেকে একটি র্যাম্প বায়েজিদে যুক্ত হবে। সবমিলিয়ে এই সাত র্যাম্প নগরীর উত্তরাঞ্চল ও শহরের কেন্দ্রের মধ্যে চলাচলকে করবে সহজতর।
চৌধুরী হাটের বাসিন্দা খালেদ হোসাইন বলেন, ‘শহরে যাওয়ার সময় ২০ মিনিট, ফিরতে গিয়ে ৩০-৪০ মিনিট আটকে থাকতে হয়। এটা শুধু আমার নয়, এই পথে চলাচল করা হাজারো মানুষের সমস্যা।’
সিডিএ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিস্তারিত প্রকল্প পরিকল্পনার কাজ চলছে। এর সঙ্গে সমন্বয় রাখা হচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গেও।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি অনেকটাই কমবে—এমনটাই বিশ্বাস করছেন নগর পরিকল্পনাবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, শুধু অবকাঠামো নয়, নগরীর ভবিষ্যৎ পরিবহন ব্যবস্থার জন্য এটি হতে পারে একটি টার্নিং পয়েন্ট।