Sunday, July 6, 2025
প্রধান পাতাখেলা২০০৯ সালের আজকের দিনে, অর্থাৎ ৩ মার্চ লাহোরের এই জায়গাতেই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট...

২০০৯ সালের আজকের দিনে, অর্থাৎ ৩ মার্চ লাহোরের এই জায়গাতেই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের টিম বাসে সন্ত্রাসীদের বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে

লাহোরের লিবার্টি চকে ৩ মার্চ: ১৬ বছর আগের বিভীষিকা

২০০৯ সালের ৩ মার্চ, পাকিস্তানের লাহোরে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ওইদিন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলের বাসে হামলার ঘটনাটি শুধু পাকিস্তানের ক্রিকেটকেই নয়, বরং পুরো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিরাপত্তাব্যবস্থাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল।

ঘটনার স্মৃতিচারণ

লাহোরের লিবার্টি চকে এখনো সেই দিনের স্মৃতি জাগরুক অনেকের মনে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, পার্ল কন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে বেরিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলের বাস যখন লিবার্টি চকের দিকে আসছিল, তখনই ঘটে এই হামলা। বাসের সামনে ও পেছনে থাকা স্বল্পসংখ্যক পুলিশ সদস্য হামলাকারীদের ঠেকাতে ব্যর্থ হন। বন্দুকধারীরা হঠাৎ করেই আশপাশের বিলবোর্ড ও দোকানের আড়াল থেকে বেরিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। এতে শ্রীলঙ্কান দলের কয়েকজন ক্রিকেটার আহত হন, নিহত হন ছয়জন পুলিশ সদস্য।

পাকিস্তানের ক্রিকেটের ওপর প্রভাব

এই ঘটনার পর প্রায় ছয় বছর পাকিস্তানে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে দলের সফরের মাধ্যমে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরলেও, এখনো বিদেশি দলগুলোকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে খেলতে হয়। বর্তমানেও প্রতিটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময় আশপাশের এলাকা অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়, যার ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

নিরাপত্তা জোরদার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ও সরকার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্বাভাবিক করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২৫ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের বাইরে স্থাপিত ২৫ ফুট উচ্চতার ‘রানিং ম্যান’ ভাস্কর্যটি ক্রিকেটের দৃঢ়তা ও পাকিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।

শেষ কথা

১৬ বছর আগের সেই কালো অধ্যায়ের পর পাকিস্তান ক্রিকেট ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। লিবার্টি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ও সাধারণ মানুষ চান, ক্রিকেট যেন নিরাপদ থাকে এবং পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন অব্যাহত থাকে। তারা নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের অসুবিধা মেনে নিলেও, চায় যেন আর কখনো এমন দুঃসহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ