Wednesday, July 9, 2025
প্রধান পাতাখেলাব্যর্থতার শুরু আছে শেষ নেই, ‘জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি’

ব্যর্থতার শুরু আছে শেষ নেই, ‘জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি’

আরেকটি সিরিজ এবং আবারও সেই পরাজয়ের গল্প। সিরিজ হার কিংবা হোয়াইটওয়াশ—এ যেন নিশ্চিত সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য। প্রতি বারই সিরিজ শেষে ভুল থেকে শেখার কথা বলেন অধিনায়করা। কিন্তু সেই শেখা আর হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে। জবাবদিহির আওতায় আনার কথা বলছেন কেউ কেউ। 

বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে ছাড়াই নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। যদিও নতুন সূচনার শুরুতেও পুরনো গল্পই মঞ্চস্থ হয়েছে ঘুরেফিরে। তিন ম্যাচে দুটিতেই বড় ব্যবধানে হার। এমনকী তিন ম্যাচের কোনোটিতেই ৫০ ওভার খেলতে না পারার ব্যর্থতায় ক্রিকেটারদের সামর্থ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। 

সিরিজজুড়ে ব্যাটারদের ব্যর্থতার চিত্র কার্যত স্পষ্ট। ব্যাটিং কোচ কি করেছেন সেটি নিয়েও উঁকি দিচ্ছে নানান প্রশ্ন। লিটন দাস গেল এক বছর ধরে ওয়ানডে ক্রিকেটে পারফর্ম করতে পারছেন না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ম্যাচে সুযোগ পেলেও করতে পারেননি কোনো রান। নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা তানজিদ তামিম বা তাওহীদ হৃদয়রাও ধারাবাহিক হতে পারেননি।

বড় আরেকটি প্রশ্ন ক্রিকেটারদের দায়িত্ববোধ। তামিম, মাহমুদউল্লাহরা ক্রিকেট ছাড়লেও মাঠের ক্রিকেটে যারা দলে রয়েছেন তারাও বেশ অভিজ্ঞ। সুতরাং পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী খেলা তাদের দায়িত্ব। তবে সেটি দেখা যাচ্ছে না শান্তদের মধ্যে। তিন ম্যাচে সবকটি ওভারও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। 

অধিনায়ক মিরাজ অবশ্য তাগিদ দিয়েছেন পরের সিরিজে, ‘এটা (৫০ ওভার ব্যাট করতে না পারা) অবশ্যই চিন্তার ব্যাপার। আমি মনে করি যে প্রপার ব্যাটিং করতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হত। এটা নিয়ে কথা বলেছি আমরা। মিডল ওভারে যারা খেলে তাদের দায়িত্বটা অনেক বেশি। আমি নিজেও অনেক বল খেলতে পারিনি। এটা নিয়ে কাজ করার অনেক জায়গা আছে। সামনে অনেক খেলা আছে। যেহেতু আমি এই সিরিজে দায়িত্ব পেলাম। কোথায় উন্নতি করা দরকার, কোচের সঙ্গে কথা বলে সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করব।’ 

বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু ঘাটতি দেখছেন দলের ব্যাটারদের পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে না পারায়। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলছিলেন, ‘কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে খেলতে হবে এটার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ব্যাটিংয়ে যে ধারাবাহিকতা থাকার কথা সেটার ঘাটতিও রয়েছে।’

দলের সঙ্গে নেই স্পেশালিস্ট কোনো ব্যাটিং কোচ। সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনই দেখভাল করছেন ব্যাটারদের। তবে নতুন করে একজন ব্যাটিং কোচ নিয়োগের কথা বললেন মিঠু, ‘ব্যাটিং কোচের একটা প্রয়োজন রয়েছে দলে। এখন বোলিং তো খারাপ হচ্ছে না, ভালো হচ্ছে। ব্যাটিং কোচ একজন দরকার, বিসিবির নজর অবশ্যই রয়েছে ব্যাটিং কোচের দিকে। যতটুক জানি খোঁজা হচ্ছে।’

এদিকে, ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পালও জানালেন নতুন ব্যাটিং কোচের কথা। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলছিলেন, ‘স্পেশালিস্ট ছাড়া কোনো বিভাগ এগোতে পারে না। সুতরাং একজন ব্যাটিং কোচ বিশেষভাবে থাকা উচিত।’

বাংলাদেশ দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দেবব্রত বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে আমাদের যে একটা দল হয়ে ওঠার দরকার, সে দলটা এখনো হয়ে ওঠেনি। ক্রিকেটারদের ভেতরে দায়িত্ববোধটা কম দেখা যাচ্ছে। এটার অভাব দেখা যাচ্ছে অবশ্য ক্রিকেটারদের একটা জবাবদিহিতা থাকা উচিত। প্রত্যেক দেশের ক্রিকেটারদেরই জবাবদিহিতা থাকে আমাদের দেশেরও থাকা উচিত। সেই সঙ্গে ক্রিকেট বোর্ডেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে সেখানে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।’

 
আরও পড়ুন

সর্বশেষ