Sunday, July 6, 2025
প্রধান পাতাআন্তর্জাতিকঅবশেষে যুদ্ধবিরতি নিয়ে মুখ খুললেন নেতানিয়াহু

অবশেষে যুদ্ধবিরতি নিয়ে মুখ খুললেন নেতানিয়াহু

২৪ জুন: ইরান ও ইসরায়েলের ভয়াবহ সামরিক সংঘাতের মধ্যে নতুন মোড় নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি। গত ২১ জুন দিনগত রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে তেহরান সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

এই উত্তপ্ত অবস্থার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান ও ইসরায়েল একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় ট্রাম্প এবং ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কথা জানায়

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি

ঘোষণার কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসে, যেখানে বলা হয়, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবে ইসরায়েল সম্মতি দিয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন হলে ইসরায়েল কঠোর জবাব দেবে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “দুই সপ্তাহের আক্রমণে ইসরায়েল তার লক্ষ্য অর্জন করেছে—পারমাণবিক এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উভয় হুমকি দূর করা হয়েছে। তেহরানের আকাশে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং ইরানের সামরিক নেতৃত্বের ওপর ভয়াবহ আঘাত হানা হয়েছে।”

ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং দাবি করেছে যে, ইরানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও সরকারিভিত্তিক স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে।

ইরানের প্রতিক্রিয়া

তবে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে নাকচ করে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তিনি বলেন, “যুদ্ধবিরতির কোনও আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি।” যদিও পরে ইরানের পক্ষ থেকেও সংঘর্ষ বন্ধে কার্যত সম্মতি দেখা যায়।

ভয়াবহ হামলা ও ক্ষয়ক্ষতি

উল্লেখযোগ্যভাবে, চলমান সংঘাতের সূচনা হয় ১৩ জুন রাতে, যখন ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানে আগাম হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল তেহরানসহ বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা। এতে আইআরজিসি প্রধান, সামরিক জেনারেল, পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ জনের বেশি নিহত হয় বলে দাবি করে ইরান।

জবাবে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ শুরু করে, যেখানে তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানে। যদিও হতাহতের সংখ্যা কম, তবে ইসরায়েলে ব্যাপক অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনা

২১ জুন রাতেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়। এরপর ইরান কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালিয়ে সংঘাত আরও তীব্র করে তোলে।

উপসংহার

মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘাত বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি করেছে। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা কিছুটা স্বস্তি দিলেও, এখনও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আশা করছে, এই যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুই পক্ষ সহিংসতা থেকে সরে আসবে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ