ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে, তবে তেহরান পারস্য উপসাগরে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ও যুদ্ধজাহাজে হামলা চালাতে পারে এবং হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইরান। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও তেহরান বিশ্বাস করে, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যেকোনো সম্ভাব্য নতুন হামলার মুখে টিকে থাকতে সক্ষম। এমনকি নতুন হামলার হুমকি থাকলেও ইরান তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস আরও উল্লেখ করেছে, ইরানি সরকার মনে করে, যুদ্ধকালীন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করে দেশের জনগণ জাতীয় পতাকার চারপাশে ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
প্রতিবেদনটি আরও দাবি করে, ইরান দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার-বিধ্বংসী বোমাগুলোর হাত থেকে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো রক্ষার জন্যও যথেষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে।
এর আগে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে আগ্রাসন শুরু করে। এর জবাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইরান পাল্টা প্রতিশোধ নেয় এবং এরপর টানা কয়েকদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা চলে।
২২ জুন ভোরে মার্কিন বোমারু বিমান তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। জবাবে ২৩ জুন সন্ধ্যায় ইরান কাতারের আল উদেইদ মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
এরপর ২৪ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। ইসরায়েলও জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে রাজি হয়েছে। তেহরান পাল্টা বিবৃতিতে জানায়, তারা তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধে বাধ্য করে বিজয় অর্জন করেছে।
পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত থাকলেও, সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।